সিলেটের বিশ্বনাথে ভাম্যমাণ পণ্য বিক্রেতা নিপেশ তালুকদার খুনের মূল পরিকল্পনাকারী গ্রেপ্তার হলেও এখনও গ্রেপ্তার হয়নি খুনি। দুই মাসের অধিক সময় পার হলেও খুনি ও তার অপর সহযোগির হদিস পাচ্ছে না পুলিশ। বিভিন্ন সময় খুনিদের অবস্থান শনাক্তের কথা পুলিশ জানালেও এখনও কেন তারা গ্রেপ্তার হচ্ছে না-এমন প্রশ্ন খোদ নিপেশের স্ত্রী লক্ষী দাসের। তিনি এ ঘটনায় দায়ের করা হত্যা মামলার বাদীও।
গত ২০ এপ্রিল রাতে উপজেলার খাজাঞ্চী ইউনিয়নের বাওনপুর এলাকার পাঁচপীরের বাজারের পশ্চিমে নির্জন সড়কে ছিনতাইকারিদের ছুরিকাঘাতে প্রাণ হারান সুনামগঞ্জের দিরাই থানার সোলমানপুর গ্রামের বাসিন্দা, ভ্রাম্যমাণ পণ্য বিক্রেতা নিপেশ তালুকদার। যিনি স্বপরিবারে বসবাস করতেন সিলেট এসএমপির জালালাবাদ থানার তেমুখী এলাকায়।
এ ঘটনার পরদিন অজ্ঞাত আসামি রেখে বিশ্বনাথ থানায় হত্যা মামলা (নাম্বার ৭) দায়ের করেন নিপেশের স্ত্রী লক্ষী দাস।
মামলা দায়েরের আগেই জালালাবাদ থানার টুকেরগাঁও গুচ্ছগ্রাম এলাকার জসিম উদ্দিন (৩৬) নামের একজনকে সন্দেহজনক গ্রেপ্তার করে ৫৪ ধারায় আদালতে পাঠায় পুলিশ। পরদিন গ্রেপ্তার করা হয় ঘটনার মূলহোতা ধনপুর গুচ্ছগ্রামের বাসিন্দা কামাল উদ্দিনকে। তিনি জালালাবাদ থানার মোগলাগাঁও ইউনিয়নের আউশা গ্রামের মৃত আব্দুল ছাদিকের ছেলে। গত ১২ মে তিনিসহ আরও দ্ইুজনকে জড়িয়ে আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন কামাল। তদন্ত সংশ্লিষ্ট একটি সূত্র আদালতে দেওয়া কামালের স্বীকারোক্তির বরাত দিয়ে জানায়, টাকা ছিনতাইয়ের জন্যই খুন করা হয় ভ্রাম্যমাণ পণ্য বিক্রেতা নিপেশ তালুকদারকে। তিনজনের একটি ছিনতাইকারি টিম রেকি করছিলো আগে থেকেই। ঘটনার মূলহোতা কামালই টার্গেট করেন তার পূর্বপরিচিত নিপেশকে। উদ্দেশ্যে ছিল সুযোগ বুঝে টাকা-পয়সা ছিনিয়ে নেয়া। সে অনুযায়ী আরও দুই সহযোগি নিয়ে আঁকেন ছক। ২০ এপ্রিল সন্ধ্যা রাতে পরিকল্পনা অনুযায়ী নিপেশের ফেরার পথের নির্জন স্থানে ওঁৎ পাতেন তারা। নিপেশ পাঁচপীরের বাজারের অদূরে আসামাত্র দুই সহযোগিকে মিশন শুরু নির্দেশ দেন কামাল। নিজেকে চিনে ফেলার ভয়ে নিরাপদ দূরত্বে দাঁড়িয়ে দেখছিলেন সব। এরমধ্যেই ধস্তাধস্তির এক পর্যায়ে কামালের দুই সহযোগির মধ্যে একজন ছুরি বসিয়ে দেন নিপেশের বুকে।
মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা বিশ্বনাথ থানার উপপরিদর্শক (এসআই) জহিরুল ইসলাম ভুইয়া বলেন, ‘ইতিমধ্যে আমরা ঘটনার পরিকল্পনাকারিকে গ্রেপ্তার করতে সক্ষম হয়েছি। সে আরও দু’জনকে জড়িয়ে আদালতে স্বীকারোক্তি দিয়েছে। গ্রেপ্তারের স্বার্থে ওই দু’জনের নাম প্রকাশ করছি না। তবে, তাদের গ্রেপ্তারে পুলিশি অভিযান অব্যাহত আছে।’