
মোঃ সোহেল মিয়া, নিজস্ব প্রতিবেদক:
আমাদের এই ইট-পাথরের শহরে, যেখানে অনেক সন্তান তাদের জন্মদাত্রী মাকে অবহেলায় রাস্তায় ফেলে দেন, সেখানেই এক আশার আলো হয়ে দাঁড়িয়েছে আপন নিবাস বৃদ্ধাশ্রম। রাজধানীর উত্তরখানে অবস্থিত এই প্রতিষ্ঠানটি সেই সব সুবিধাবঞ্চিত ও অসহায় বৃদ্ধা মায়েদের ঠিকানা, যাদের আর কেউ নেই।

এই মহৎ উদ্যোগের নেপথ্যে রয়েছেন মানবিকতার এক উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত, সৈয়দা সেলিনা শেলী। রাস্তায় রাস্তায় ঘুরে বেড়ানো মায়েদের কাছে তিনি যেন এক নতুন সন্তান। ২০১০ সালে মাত্র ৭ জন অসহায় নারীকে নিয়ে যাত্রা শুরু করা আপন নিবাস এখন অসংখ্য বৃদ্ধা মায়ের আশ্রয়স্থল। এখানে যারা আসেন, তাদের অধিকাংশেরই বয়স ৫০ থেকে ৭০ বছরের বেশি। শারীরিক বা মানসিক সমস্যায় ভুগলেও আশ্রমই তাদের একমাত্র ভরসা। কেউ এখানে নতুন করে জীবনের অর্থ খুঁজে পান, কেউ বা এখান থেকেই শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন।
আশ্রমের ভেতরের দৃশ্য খুবই হৃদয়স্পর্শী। কেউ মেঝেতে শুয়ে আছেন, কেউ আপন মনে দোল খাচ্ছেন, আবার কেউ জানালার ফাঁকে উদাস দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছেন। অনেকেই একসঙ্গে বসে গল্প করছেন, যেন অদৃশ্য স্বজনদের হারানো ভালোবাসা নতুন করে ফিরে পেয়েছেন।
প্রথম দিকে সৈয়দা সেলিনা শেলীর ব্যক্তিগত অর্থায়নেই আশ্রমটি পরিচালিত হলেও, বর্তমানে ট্রাস্টি কমিটি এবং সমাজের বিত্তবানদের সহযোগিতায় এখানকার মায়েদের মুখে দু’মুঠো ভাত তুলে দেওয়া সম্ভব হচ্ছে।
আশ্রমের প্রতিষ্ঠাতা ও নির্বাহী পরিচালক সৈয়দা সেলিনা শেলী বর্তমান পরিস্থিতি সম্পর্কে বলেন, “বৃদ্ধাদের খাবারের সমস্যা কিছুটা দূর হলেও, এখনও স্বাস্থ্যসম্মত বাসস্থান নিশ্চিত করা সম্ভব হয়নি। তাদের গাদাগাদি করে থাকতে হচ্ছে, যার ফলে অনেকেই নানা রকম রোগে ভুগছেন। অসুস্থদের জন্য ওষুধের ব্যবস্থা করতে হয়।” তিনি বিত্তবানদের প্রতি সহযোগিতার হাত বাড়ানোর আহ্বান জানান।
তিনি আরও বলেন, “শুধুমাত্র বৃদ্ধা মায়েদের জন্যই নয়, যে শিশুর পৃথিবীতে আপনজন বলতে কেউ নেই, আমাদের আপন নিবাসের দরজা তাদের জন্যও সবসময় খোলা।”
আপন নিবাস বৃদ্ধাশ্রম শুধু একটি আশ্রয়স্থল নয়, এটি ভালোবাসা, মমতা আর মানবিকতার এক অনন্য উদাহরণ। এটি প্রমাণ করে যে, সমাজে এখনও এমন মানুষ আছেন, যারা নিঃস্বার্থভাবে অন্যের পাশে দাঁড়াতে প্রস্তুত।
যদি আপনি এই মহৎ উদ্যোগে শরিক হতে চান, তাহলে আপন নিবাস বৃদ্ধাশ্রমের সাথে যোগাযোগ করতে পারেন।
“আপন নিবাস বৃদ্ধাশ্রম”
সাংগঠনিক পরিচিতি
রেজিস্ট্রেশন অফ সোসাইটি নং-এস- ১৩৮৩৭/২০২২
কুমুদখোলা,তেরমুখ, কড়াইহাটি, উত্তরখান, ঢাকা-১২৩০, বাংলাদেশ।
মোবাইল: +৮৮-০১৮১৬৭৭৯১৬৩, +৮৮-০১৭১৬৬৮০১৯২
Gmail: [email protected]