ঢাকা ০৮:৩৮ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ১৭ মার্চ ২০২৫, ৩ চৈত্র ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

লামা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের ইউএইচএফপিও’র স্বেচ্ছাচারীতা 

জাহিদ হাসান,লামা(বান্দরবান)প্রতিনিধি:
লামায় রোগী কল্যাণ সমিতির আওতায় অসহায়, দুঃস্থ, দরিদ্র ও সহায় সম্বলহীন অসুস্থ মানুষের মাঝে বিনামূল্যে প্রদত্ত ওষুধের বিলভাউচারে স্বাক্ষর দিচ্ছেন না ইউএইচএফপিও। এতে ৯ মাসের বকেয়া বিল প্রায় ১ লাখ টাকা উত্তোলন করতে পারছেন না ওষুধ সরবরাহকারী ব্যাক্তি। স্বাস্থ্য  কমপ্লেক্সের আরএমও  উপজেলা সমাজ সেবা অফিসের ছাড়পত্রকে আমলে নিচ্ছেন না  ইউএইচএফপিও। এছাড়াও লামা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের কর্মকর্তা এখিং মার্মার স্বেচ্ছাচারিতায় সেবাপ্রার্থীরা হয়রানির শিকার হচ্ছে বলে রাজ পথে বিএনপি’র এক সভায় প্রতিবাদ জানানো হয়েছর। ভুক্তভোগীরা জানায়, ৫ আগস্ট পরিবর্তিত প্রেক্ষাপটে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার সারা দেশের ন্যায় লামা পৌরসভার মেয়র ও কাউন্সিলরদের পদ শুণ্য ঘোষণা করে প্রশাসক নিয়োগ দেন। লামা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে প্রধান কর্মকর্তা ডাঃ এখিং মার্মা পৌরসভার ৩ নং ওয়ার্ডের কাউন্সিলরের দায়িত্ব প্রাপ্ত হন।
সেবা প্রার্থী জনসাধারণ অভিযোগ করেন যে, ডাঃ এখিং মার্মা তাদের সাথে রক্ষণাত্মক আচরণ করেন।  কোনো কাগজে সনাক্ত সাক্ষর নিতে গেলে, নানান অজুহাতে সেবা প্রার্থীদের সাক্ষাত ও প্রয়োজনীয় কাগজে সই না করে ফেরৎ দেন। শ্রমিক শ্রেণির দিন মজুর মানুষগুলো তাদের মজুরি ফেলে দিনের পর দিন ধর্না দিয়েও সেবা পাচ্ছেন না। পৌরসভার ৩ নং ওয়ার্ডের চার বারে নির্বাচিত (সাবেক) কাউন্সিলর বিএনপি নেতা সাইফুদ্দিন নিজেই ইউএইচএফপিও এখিং মার্মার বিরুদ্ধে স্বেচ্ছাচারিতার অভিযোগ করে বলেন, ‘তিনি খুবই সাম্প্রদায়িক মানসিকতা সম্পন্ন একজন কর্মকর্তা। কোনো কাগজপত্রে স্বাক্ষরতো করেনই না, উপরন্তু সেবা প্রার্থীদের সাথে দুর্ব্যবহার করেন’। এছাড়া ২ ফেব্রুয়ারি লামায় বিএনপি’র এক বিক্ষোভ মিছিল থেকেও লামা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের ইউএইচএফপিও ডাঃ এখিং মার্মাকে আওয়ামী দোসর আখ্যাদিয়ে স্বেচ্ছাচারিতার প্রতিবাদ করেন। লামা মফস্বল সাংবাদিক ইউনিয়নের সভাপতি মোহাম্মদ রফিকুল ইসলাম অভিযোগ করে বলেন, ‘ডাঃ এখিং মার্মার ব্যাবহার ভালো না।
সাংবাদিক রফিক আরো অভিযোগ করেন যে, ‘ডাঃ এখিং মার্মা বান্দরবান জেলা পরিষদের (পলাতক) সাবেক চেয়ারম্যান ক্য শৈহ্লা পুত্রের ক্লাশমেট-বন্ধু। লামায় যোগদানের পর ক্য শৈহ্লা পরিবারের দাপট দেখিয়েছিল কিছু দিন। ৫ আগস্ট পরবর্তীতেও তিনি অহঙ্কার ও রক্ষণশীল মনোভাব দেখিয়ে চলছে’।অপরদিকে সমাজ সেবা অফিস সূত্রে জানাযায়, ‘স্বাস্থ্যকর জীবনে উত্তরণের পথে প্রতিবন্ধকতা দূর করে রোগীদের স্বাস্থ্য সেবা সংরক্ষণ, উন্নয়ন এবং চিকিৎসাত্তোর পুনর্বাসনের জন্য রোগী কল্যাণ সমিতির মাধ্যমে হাসপাতাল ও সমাজসেবা কর্তৃক কার্যক্রম পরিচালিত হয়। কিন্তু যাবতীয় প্রক্রিয়া অনুস্মরণ করে বিগত ৯ মাসে  অক্ষম রোগীদের চিকিৎসা সহায়ক খরচের প্রায় এক লাখ টাকার বিল ভাউচারে সাক্ষর করছেন না এই কর্মকর্তা। ফলে রোগী কল্যাণ সমিতির মনোনীত ওষুধ বিতরণকারী ফার্মেসীর মালিক কষ্টে পড়েছেন। এসব বিষয়ে লামা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের ইউএইচএফপিও এখিং মার্মার কাছে জানতে চাইলে, তিনি সব অভিযোগ নাকচ করে দেন। তিনি বলেন, ‘জন্ম নিবন্ধন ভোটার হালনাগাদ করণে আমার কাছে সেবা প্রার্থীরা ছবি সাক্ষর বিহীন কাগজ নিয়ে আসলে তাতে আমি সাক্ষর করিনা’। রোগী কল্যাণ সমিতির বিল ভাউচারে সাক্ষর করে রেখেছি। ছাড় দিচ্ছিনা কারণ সমাজ সেবা অফিস পুর্নাঙ্গ কাগজপত্র উপস্থাপন করেন নাই। অপরদিকে উপজেলা সমাজ সেবা কর্মকর্তা জানান, ‘সমাজ সেবা অফিস থেকে সকল কাগপত্র দেয়া হয়েছে। কিন্তু ইউএইচএফপিও মহোদয় কোন ধরণের পুর্নাঙ্গ কাগজ চাচ্ছেন; সেটা আমার বোধগম্য নই’। তিনি আরো জানান, ‘বিষয়টি নিয়ে সদ্য যোগদানকৃত লামা উপজেলা নির্বাহী অফিসার মহোদয়ের সাথে কথা হয়েছে, তিনি খোঁজ নিয়ে জানবেন বলে জানান’।
ট্যাগস :
জনপ্রিয় সংবাদ

প্রশাসনের কর্মকর্তা পরিচয়ে আসামিকে গ্রেফতারে বাধা ঃআওয়ামী লীগ নেতা আব্দুস সোবহান গ্রেপ্তার 

লামা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের ইউএইচএফপিও’র স্বেচ্ছাচারীতা 

আপডেট সময় ০৩:০৭:৪৯ অপরাহ্ন, বুধবার, ৫ ফেব্রুয়ারী ২০২৫
জাহিদ হাসান,লামা(বান্দরবান)প্রতিনিধি:
লামায় রোগী কল্যাণ সমিতির আওতায় অসহায়, দুঃস্থ, দরিদ্র ও সহায় সম্বলহীন অসুস্থ মানুষের মাঝে বিনামূল্যে প্রদত্ত ওষুধের বিলভাউচারে স্বাক্ষর দিচ্ছেন না ইউএইচএফপিও। এতে ৯ মাসের বকেয়া বিল প্রায় ১ লাখ টাকা উত্তোলন করতে পারছেন না ওষুধ সরবরাহকারী ব্যাক্তি। স্বাস্থ্য  কমপ্লেক্সের আরএমও  উপজেলা সমাজ সেবা অফিসের ছাড়পত্রকে আমলে নিচ্ছেন না  ইউএইচএফপিও। এছাড়াও লামা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের কর্মকর্তা এখিং মার্মার স্বেচ্ছাচারিতায় সেবাপ্রার্থীরা হয়রানির শিকার হচ্ছে বলে রাজ পথে বিএনপি’র এক সভায় প্রতিবাদ জানানো হয়েছর। ভুক্তভোগীরা জানায়, ৫ আগস্ট পরিবর্তিত প্রেক্ষাপটে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার সারা দেশের ন্যায় লামা পৌরসভার মেয়র ও কাউন্সিলরদের পদ শুণ্য ঘোষণা করে প্রশাসক নিয়োগ দেন। লামা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে প্রধান কর্মকর্তা ডাঃ এখিং মার্মা পৌরসভার ৩ নং ওয়ার্ডের কাউন্সিলরের দায়িত্ব প্রাপ্ত হন।
সেবা প্রার্থী জনসাধারণ অভিযোগ করেন যে, ডাঃ এখিং মার্মা তাদের সাথে রক্ষণাত্মক আচরণ করেন।  কোনো কাগজে সনাক্ত সাক্ষর নিতে গেলে, নানান অজুহাতে সেবা প্রার্থীদের সাক্ষাত ও প্রয়োজনীয় কাগজে সই না করে ফেরৎ দেন। শ্রমিক শ্রেণির দিন মজুর মানুষগুলো তাদের মজুরি ফেলে দিনের পর দিন ধর্না দিয়েও সেবা পাচ্ছেন না। পৌরসভার ৩ নং ওয়ার্ডের চার বারে নির্বাচিত (সাবেক) কাউন্সিলর বিএনপি নেতা সাইফুদ্দিন নিজেই ইউএইচএফপিও এখিং মার্মার বিরুদ্ধে স্বেচ্ছাচারিতার অভিযোগ করে বলেন, ‘তিনি খুবই সাম্প্রদায়িক মানসিকতা সম্পন্ন একজন কর্মকর্তা। কোনো কাগজপত্রে স্বাক্ষরতো করেনই না, উপরন্তু সেবা প্রার্থীদের সাথে দুর্ব্যবহার করেন’। এছাড়া ২ ফেব্রুয়ারি লামায় বিএনপি’র এক বিক্ষোভ মিছিল থেকেও লামা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের ইউএইচএফপিও ডাঃ এখিং মার্মাকে আওয়ামী দোসর আখ্যাদিয়ে স্বেচ্ছাচারিতার প্রতিবাদ করেন। লামা মফস্বল সাংবাদিক ইউনিয়নের সভাপতি মোহাম্মদ রফিকুল ইসলাম অভিযোগ করে বলেন, ‘ডাঃ এখিং মার্মার ব্যাবহার ভালো না।
সাংবাদিক রফিক আরো অভিযোগ করেন যে, ‘ডাঃ এখিং মার্মা বান্দরবান জেলা পরিষদের (পলাতক) সাবেক চেয়ারম্যান ক্য শৈহ্লা পুত্রের ক্লাশমেট-বন্ধু। লামায় যোগদানের পর ক্য শৈহ্লা পরিবারের দাপট দেখিয়েছিল কিছু দিন। ৫ আগস্ট পরবর্তীতেও তিনি অহঙ্কার ও রক্ষণশীল মনোভাব দেখিয়ে চলছে’।অপরদিকে সমাজ সেবা অফিস সূত্রে জানাযায়, ‘স্বাস্থ্যকর জীবনে উত্তরণের পথে প্রতিবন্ধকতা দূর করে রোগীদের স্বাস্থ্য সেবা সংরক্ষণ, উন্নয়ন এবং চিকিৎসাত্তোর পুনর্বাসনের জন্য রোগী কল্যাণ সমিতির মাধ্যমে হাসপাতাল ও সমাজসেবা কর্তৃক কার্যক্রম পরিচালিত হয়। কিন্তু যাবতীয় প্রক্রিয়া অনুস্মরণ করে বিগত ৯ মাসে  অক্ষম রোগীদের চিকিৎসা সহায়ক খরচের প্রায় এক লাখ টাকার বিল ভাউচারে সাক্ষর করছেন না এই কর্মকর্তা। ফলে রোগী কল্যাণ সমিতির মনোনীত ওষুধ বিতরণকারী ফার্মেসীর মালিক কষ্টে পড়েছেন। এসব বিষয়ে লামা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের ইউএইচএফপিও এখিং মার্মার কাছে জানতে চাইলে, তিনি সব অভিযোগ নাকচ করে দেন। তিনি বলেন, ‘জন্ম নিবন্ধন ভোটার হালনাগাদ করণে আমার কাছে সেবা প্রার্থীরা ছবি সাক্ষর বিহীন কাগজ নিয়ে আসলে তাতে আমি সাক্ষর করিনা’। রোগী কল্যাণ সমিতির বিল ভাউচারে সাক্ষর করে রেখেছি। ছাড় দিচ্ছিনা কারণ সমাজ সেবা অফিস পুর্নাঙ্গ কাগজপত্র উপস্থাপন করেন নাই। অপরদিকে উপজেলা সমাজ সেবা কর্মকর্তা জানান, ‘সমাজ সেবা অফিস থেকে সকল কাগপত্র দেয়া হয়েছে। কিন্তু ইউএইচএফপিও মহোদয় কোন ধরণের পুর্নাঙ্গ কাগজ চাচ্ছেন; সেটা আমার বোধগম্য নই’। তিনি আরো জানান, ‘বিষয়টি নিয়ে সদ্য যোগদানকৃত লামা উপজেলা নির্বাহী অফিসার মহোদয়ের সাথে কথা হয়েছে, তিনি খোঁজ নিয়ে জানবেন বলে জানান’।