ঢাকা ০৮:২৫ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ১৭ মার্চ ২০২৫, ৩ চৈত্র ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

নারায়ে তাকবির আল্লাহু আকবার স্লোগান দিয়ে ফাঁকা গু’লি, পরে টেন্ডার বাক্স লুট

মোঃহাসান আলী স্টাফঃ রিপোর্টার:

রাজশাহীতে ফাঁকা গুলি ছুড়ে ও ককটেলের বিস্ফোরণ ঘটিয়ে হাট ইজারার টেন্ডার বাক্স লুট করার ঘটনা ঘটেছে। সোমবার (৩ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে রাজশাহী জেলার পবা উপজেলা পরিষদে এ ঘটনা ঘটে।টেন্ডার বাক্স লুটের ঘটনায় জড়িতরা ‘নারায়ে তাকবির’ স্লোগান দিচ্ছিলেন বলে জানিয়েছেন স্থানীয় যুবদলের এক নেতা। ওই যুবদল নেতা তার লোকজন নিয়ে দরপত্র দাখিল করতে গিয়ে বাধা পান।উপজেলা নির্বাহী অফিসারের (ইউএনও) কার্যালয় জানিয়েছে, পবা উপজেলার ১২টি হাট ইজারা দিতে গত ১৫ জানুয়ারি বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হয়। সোমবার ছিল দরপত্র দাখিলের শেষ দিন। টেন্ডার বাক্স রাখা ছিল ইউএনওর কার্যালয়ের নিচতলায়। সেখানে এক পক্ষ আরেক পক্ষকে দরপত্র দাখিল করতে বাধা দেয়।এরপর গুলি, ককটেলের বিস্ফোরণ এবং টেন্ডার বাক্স ভেঙে সব দরপত্র লুট করে নিয়ে যাওয়ার ঘটনা ঘটে।

এ সময় শাকিলুর রহমান রন (৪২) নামের সাবেক এক যুবদল নেতা ছুরিকাঘাতে আহত হন। শাকিলুর রাজশাহী নগরের শাহমখদুম থানা যুবদলের সাবেক যুগ্ম সম্পাদক। তাকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।নাম প্রকাশ না করার শর্তে এক যুবদল নেতা বলেন, ‘মূলত খড়খড়ি হাট ইজারা নিয়ে দ্বন্দ্ব। আমরা দরপত্র জমা দিতে এলেই প্রথমে গেটের কাছে কয়েকজন বাধা দেন। এর পরও আমরা ব্যাংক ড্রাফট করি এবং বাক্সে দরপত্র জমা দিতে যাই। তখন আমাদের লোকজনের ওপর হামলা হয়। এক পর্যায়ে বাধাদানকারীরা কয়েক রাউন্ড ফাঁকা গুলি ছোড়ে, ককটেলের বিস্ফোরণ ঘটায় এবং বাক্স খুলে সব শিডিউল লুট করে নিয়ে যায়।ওই যুবদল নেতা আরো বলেন, “ককটেল বিস্ফোরণ, গুলিবর্ষণ এবং টেন্ডার বাক্স থেকে দরপত্র লুট করে নিয়ে যাওয়ার সময় হামলাকারীরা ‘নারায়ে তাকবীর’ স্লোগান দিচ্ছিলেন।”

হামলাকারীদের নেতৃত্বদানকারী হিসেবে তিনি স্থানীয় এক জামায়াত নেতা ও সাবেক এক শিবির নেতার নাম জানান। যোগাযোগ করা হলে সাবেক ওই শিবির নেতাও নাম প্রকাশ করে বক্তব্য দেবেন না বলে জানিয়েছেন। তিনি বলেন, ‘আমি দরপত্র জমা দিতে গিয়েছিলাম তা ঠিক। তবে এই দরপত্র লুটের ঘটনার সঙ্গে আমার কোনো সম্পৃক্ততা নেই। এটা যুবদল এবং বিএনপির দুই গ্রুপের দ্বন্দ্ব।’রাজশাহীর শাহমখদুম থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মাসুমা মোস্তারিন বলেন, ‘গুলি ফুটেছে। ককটেলেরও বিস্ফোরণ ঘটানো হয়েছে। জমা পড়া সব দরপত্র লুট হয়েছে। শুধু বাক্সটি পড়ে আছে। উপজেলা প্রশাসন যেভাবে চাইবে সেভাবে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

বিষয়টি নিয়ে পবার ইউএনও আরাফাত আমান আজিজ বলেন, ‘দরপত্র জমাদানের সময় ছিল সকাল ৯টা থেকে দুপুর ১২টা পর্যন্ত। সকাল থেকে বেশ কয়েকটা দরপত্র জমাও পড়ে। দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে হঠাৎ করেই দুই পক্ষের মধ্যে আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে ককটেল বিস্ফোরণ ও কয়েক রাউন্ড গোলাগুলির ঘটনা ঘটে। এ সময় দরপত্র বাক্স ভেঙে জমা হওয়া দরপত্র লুট করে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। এ ঘটনার পর পুলিশ ঘটনাস্থলে এসে আলামত সংগ্রহ করেছে। এখন পরিস্থিতি স্বাভাবিক। আমরা এ বিষয়ে আইনানুগ ব্যবস্থা নেব।’

ট্যাগস :
আপলোডকারীর তথ্য

Daily Naba Bani

মিডিয়া তালিকাভুক্ত জাতীয় দৈনিক নববাণী পত্রিকার জন্য সকল জেলা উপজেলায় সংবাদ কর্মী আবশ্যকঃ- আগ্রহীরা আজই আবেদন করুন। মেইল: [email protected]
জনপ্রিয় সংবাদ

প্রশাসনের কর্মকর্তা পরিচয়ে আসামিকে গ্রেফতারে বাধা ঃআওয়ামী লীগ নেতা আব্দুস সোবহান গ্রেপ্তার 

নারায়ে তাকবির আল্লাহু আকবার স্লোগান দিয়ে ফাঁকা গু’লি, পরে টেন্ডার বাক্স লুট

আপডেট সময় ০৮:০১:১৯ অপরাহ্ন, সোমবার, ৩ ফেব্রুয়ারী ২০২৫

মোঃহাসান আলী স্টাফঃ রিপোর্টার:

রাজশাহীতে ফাঁকা গুলি ছুড়ে ও ককটেলের বিস্ফোরণ ঘটিয়ে হাট ইজারার টেন্ডার বাক্স লুট করার ঘটনা ঘটেছে। সোমবার (৩ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে রাজশাহী জেলার পবা উপজেলা পরিষদে এ ঘটনা ঘটে।টেন্ডার বাক্স লুটের ঘটনায় জড়িতরা ‘নারায়ে তাকবির’ স্লোগান দিচ্ছিলেন বলে জানিয়েছেন স্থানীয় যুবদলের এক নেতা। ওই যুবদল নেতা তার লোকজন নিয়ে দরপত্র দাখিল করতে গিয়ে বাধা পান।উপজেলা নির্বাহী অফিসারের (ইউএনও) কার্যালয় জানিয়েছে, পবা উপজেলার ১২টি হাট ইজারা দিতে গত ১৫ জানুয়ারি বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হয়। সোমবার ছিল দরপত্র দাখিলের শেষ দিন। টেন্ডার বাক্স রাখা ছিল ইউএনওর কার্যালয়ের নিচতলায়। সেখানে এক পক্ষ আরেক পক্ষকে দরপত্র দাখিল করতে বাধা দেয়।এরপর গুলি, ককটেলের বিস্ফোরণ এবং টেন্ডার বাক্স ভেঙে সব দরপত্র লুট করে নিয়ে যাওয়ার ঘটনা ঘটে।

এ সময় শাকিলুর রহমান রন (৪২) নামের সাবেক এক যুবদল নেতা ছুরিকাঘাতে আহত হন। শাকিলুর রাজশাহী নগরের শাহমখদুম থানা যুবদলের সাবেক যুগ্ম সম্পাদক। তাকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।নাম প্রকাশ না করার শর্তে এক যুবদল নেতা বলেন, ‘মূলত খড়খড়ি হাট ইজারা নিয়ে দ্বন্দ্ব। আমরা দরপত্র জমা দিতে এলেই প্রথমে গেটের কাছে কয়েকজন বাধা দেন। এর পরও আমরা ব্যাংক ড্রাফট করি এবং বাক্সে দরপত্র জমা দিতে যাই। তখন আমাদের লোকজনের ওপর হামলা হয়। এক পর্যায়ে বাধাদানকারীরা কয়েক রাউন্ড ফাঁকা গুলি ছোড়ে, ককটেলের বিস্ফোরণ ঘটায় এবং বাক্স খুলে সব শিডিউল লুট করে নিয়ে যায়।ওই যুবদল নেতা আরো বলেন, “ককটেল বিস্ফোরণ, গুলিবর্ষণ এবং টেন্ডার বাক্স থেকে দরপত্র লুট করে নিয়ে যাওয়ার সময় হামলাকারীরা ‘নারায়ে তাকবীর’ স্লোগান দিচ্ছিলেন।”

হামলাকারীদের নেতৃত্বদানকারী হিসেবে তিনি স্থানীয় এক জামায়াত নেতা ও সাবেক এক শিবির নেতার নাম জানান। যোগাযোগ করা হলে সাবেক ওই শিবির নেতাও নাম প্রকাশ করে বক্তব্য দেবেন না বলে জানিয়েছেন। তিনি বলেন, ‘আমি দরপত্র জমা দিতে গিয়েছিলাম তা ঠিক। তবে এই দরপত্র লুটের ঘটনার সঙ্গে আমার কোনো সম্পৃক্ততা নেই। এটা যুবদল এবং বিএনপির দুই গ্রুপের দ্বন্দ্ব।’রাজশাহীর শাহমখদুম থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মাসুমা মোস্তারিন বলেন, ‘গুলি ফুটেছে। ককটেলেরও বিস্ফোরণ ঘটানো হয়েছে। জমা পড়া সব দরপত্র লুট হয়েছে। শুধু বাক্সটি পড়ে আছে। উপজেলা প্রশাসন যেভাবে চাইবে সেভাবে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

বিষয়টি নিয়ে পবার ইউএনও আরাফাত আমান আজিজ বলেন, ‘দরপত্র জমাদানের সময় ছিল সকাল ৯টা থেকে দুপুর ১২টা পর্যন্ত। সকাল থেকে বেশ কয়েকটা দরপত্র জমাও পড়ে। দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে হঠাৎ করেই দুই পক্ষের মধ্যে আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে ককটেল বিস্ফোরণ ও কয়েক রাউন্ড গোলাগুলির ঘটনা ঘটে। এ সময় দরপত্র বাক্স ভেঙে জমা হওয়া দরপত্র লুট করে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। এ ঘটনার পর পুলিশ ঘটনাস্থলে এসে আলামত সংগ্রহ করেছে। এখন পরিস্থিতি স্বাভাবিক। আমরা এ বিষয়ে আইনানুগ ব্যবস্থা নেব।’