ফরিদপুরের বোয়ালমারীতে খ্রিষ্টান সম্প্রদায়ের দুই ব্যক্তিকে কুপিয়ে হত্যার ২০ বছর পর চারজনকে যাবজ্জীবন সশ্রম কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। পাশাপাশি প্রত্যেককে ২০ হাজার টাকা করে জরিমানা করা হয়েছে। জরিমানা অনাদায়ে তাদের আরও ছয় মাস করে বিনাশ্রম কারাদণ্ড ভোগ করতে হবে।
মঙ্গলবার (২৯ অক্টোবর) দুপুর ১২টার দিকে ফরিদপুরের বিশেষ জজ আদালতের বিচারক মো. শফিউদ্দীন এ রায় ঘোষণা করেন। রায় ঘোষণার সময় চার আসামিই পলাতক ছিলেন। আদালত তাদের অনুপস্থিতিতে রায় প্রদান করে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেন।
দণ্ডপ্রাপ্তরা হলেন—আলফাডাঙ্গা উপজেলার বানা ইউনিয়নের শিরগ্রামের আনোয়ার হোসেন (৫৩), বোয়ালমারী উপজেলার গুণবাহা ইউনিয়নের গুণবাহা গ্রামের কামরুল হাসান ওরফে কামরুজ্জামান (৪৫), চাঁদপুর ইউনিয়নের ধোপাপাড়া গ্রামের মনিরুজ্জামান ওরফে মনির (৪০) এবং একই ইউনিয়নের চর ধোপাপাড়া গ্রামের আব্দুস সামাদ (৬০)।
আদালত সূত্রে জানা যায়, ২০০৫ সালের ২৮ জুলাই দিবাগত রাত আড়াইটা থেকে তিনটার মধ্যে বোয়ালমারী উপজেলার চর ধোপাপাড়া গ্রামে খ্রিষ্টান সম্প্রদায়ের দুই ব্যক্তি তপন রায় (৩০) ও নিকলাল মাঝি (৩৫)-কে কুপিয়ে হত্যা করা হয়। নিহতরা ওই গ্রামের বিপুল কুমার বাকচীর বাড়ির ভাড়াটিয়া ছিলেন।
সেদিন রাতে অজ্ঞাত ঘাতকরা তাদের ঘরে ঢুকে ধারালো অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে জখম করে। পরে এলাকাবাসী আহতদের উদ্ধার করে বোয়ালমারী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাদের মৃত ঘোষণা করেন।
ঘটনার পরদিন নিহতদের বাড়ির মালিক বিপুল কুমার বাকচী বাদী হয়ে বোয়ালমারী থানায় অজ্ঞাতনামা ব্যক্তিদের আসামি করে হত্যা মামলা দায়ের করেন। মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা উপপরিদর্শক (এসআই) সুলতান মাহমুদ ২০০৭ সালের ২৮ মার্চ ওই চারজনের বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করেন।
রাষ্ট্রপক্ষের কৌশলী (পিপি) মো. আজিজুর রহমান বলেন, “আসামিদের স্বীকারোক্তি অনুযায়ী, তারা টাকার লোভে ওই দুই ব্যক্তির ঘরে প্রবেশ করে হত্যাকাণ্ড ঘটায়। পরে জামিনে গিয়ে তারা পলাতক হয়। দীর্ঘ সময় পর হলেও এই রায়ে আমরা ন্যায়বিচার পেয়েছি। রাষ্ট্রপক্ষ এতে সন্তুষ্ট।”
শেখ হাচান, স্টাফ রিপোর্টার : 




















